কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার ৫টি উপায় - কিডনি সমস্যার ১১টি সমাধান

কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় এবং কিডনি সমস্যার সমাধান নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলে আমাদের আলোচ্য বিষয়। সাথে সাথে কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করব ইনশাল্লাহ। একজন স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তি হিসেবে আমাদের সকলেরই কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় (How to understand if the kidneys are good) বা কিডনি সমস্যার সমাধান (Solution for kidney problems) সম্পর্কে জানা থাকা প্রয়োজন। তাই চলুন কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় এবং কিডনি সমস্যার সমাধান সম্পর্কে এ আর্টিকেলে বিস্তারিত জেনে নিই।
কিডনি-সমস্যার-সমাধান
আমাদের সকলেরই কিডনি ভালো রাখতে হবে ভালোভাবে বাঁচতে হলে। কথায় বলে, শরীর সকল সুখের মূল। কিন্তু আপনার শরীরই যদি অসুস্থ থাকে তাহলে আপনার সুখ থেকে কি লাভ? তাই শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এর মধ্যে কিডনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিডনি সুস্থ আছে কিনা কিংবা কিডনি সমস্যার উপায় সম্পর্কে জানতে এই আর্টিকেলটি পুরোপুরি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় - কিডনি সমস্যার সমাধা

ভূমিকা | কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় - কিডনি সমস্যার সমাধান

আজকের আর্টিকেলের প্রধান আলোচ্য বিষয় হচ্ছে কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় বা কিডনি সমস্যার সমাধান। সাথে সাথে কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ নিয়েও একটি বিস্তর আলোচনা রাখার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ। এর পাশাপাশি থাকছে কিডনি রোগের লক্ষণ, কিডনিতে ইনফেকশন কেন হয়? কিডনি ইনফেকশন হলে করণীয়, কিডনি রোগ কি ভাল হয়? কিডনি ভালো রাখার উপায়, কিডনি রোগের ঔষধ সহ কিডনি সংক্রান্ত আরো যাবতীয় বিষয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব। বর্তমানে কিডনির সমস্যা বহুল পরিমাণে বেড়ে গিয়েছে।

তাই আমাদের সকলেরই কিডনি সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে ধারণা রাখা একান্ত প্রয়োজন। কিডনি বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছি আজকের এই আর্টিকেলে। আপনি সমস্ত কিছু তখনই জানতে পারবেন যখন এই আর্টিকেলটি পুরোপুরি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। তো আমি আশা করব আপনি একজন সুপ্রিয় পাঠক হিসেবে এ আর্টিকেলটি পুরোপুরি পড়ে কিডনি রোগ সম্পর্কে বিস্তর ধারণা লাভ করবেন। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে মূল্য লেখায় ফিরে যায়।

কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ (Symptoms of kidney damage) | কিডনি রোগের লক্ষণ

কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ (kidney damage er lokkhon) বা কিডনি রোগের লক্ষণ নিয়ে এখন আমাদের বিস্তারিত আলোচনার বিষয়। মানব দেহের প্রত্যেকটা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তার মধ্যে কিডনি একটু বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলা যেতে পারে। মানবদেহে দুটি কিডনি থাকে। কিডনিকে ভালো রাখতে হলে বিভিন্ন বিষয়ের প্রতি এবং খাবার-দাবারের প্রতি বিশেষ নজর রাখতে হবে। 

কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ (Symptoms of kidney damage) সম্পর্কে আমাদের বিস্তারিত জানতে হবে। এই প্যারাগ্রাফে আমি আপনাদের সাথে কিডনি ড্যামেজের বেশ কিছু লক্ষণ (kidney damage er lokkhon) নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব ইনশাল্লাহ।
কেননা, একজন স্বাস্থ্য সচেতন ব্যক্তি হিসেবে অবশ্যই আপনার কিডনি সম্পর্কে জেনে রাখা প্রয়োজন। কিডনি রোগের লক্ষণগুলো জানা থাকলে আপনি প্রাথমিক পর্যায়েই চিকিৎসা গ্রহণ করে খুব তাড়াতাড়ি কিডনিকে সুস্থ করতে পারবেন। আর যদি কিডনি ড্যামেজ এর লক্ষণগুলো আপনার জানা না থাকে তাহলে আপনি বুঝতেই পারবেন না যে আপনার কিডনি ধীরে ধীরে ড্যামেজের দিকে চলে যাচ্ছে। 

কাজেই, একজন সতর্ক ব্যাক্তি হিসেবে আপনার কিডনি রোগের বিভিন্ন লক্ষণ সম্পর্কে জেনে রাখা প্রয়োজন। যেটা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদের জানাতে চলেছি। তো চলুন জেনে আসি কিডনি ড্যামেজের লক্ষণগুলো সম্পর্কে। আপনাদের বোঝার সুবিধার জন্য লক্ষণগুলো পয়েন্ট আকারে বিশ্লেষণ করলাম।
  • কিডনি ড্যামেজের লক্ষণের মধ্যে প্রথমে রয়েছে প্রসাবে সমস্যা। অর্থাৎ ঘন ঘন প্রসাব হওয়া এবং প্রসবের সাথে রক্ত যাওয়া কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণ।
  • পাশাপাশি প্রসাবের সময় ব্যথা অনুভূত হওয়া এটিও কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণ এর এর মধ্যে অন্যতম।
  • শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। এটি হয়ে থাকে মূলত রক্তস্বল্পতা এবং ফুসফুসের তরল পদার্থ জমার জন্য।
  • সব সময় ক্লান্তি অনুভব হওয়া এটিও আরেকটি লক্ষণ।
  • দুশ্চিন্তা, বিভ্রান্তি বা সবসময় টেনশনে থাকা কিডনি সমস্যার লক্ষণ।
  • শরীরের চুলকানি এবং র‍্যাশ দেখা দিতে পারে।
  • পায়ের গোড়ালি এবং পাতা ফুলে যাওয়া কিডনি ড্যামেজের আরেকটি লক্ষণ।
  • সাথে সাথে খাবারে অরুচি সব সময় লেগেই থাকা।
  • দীর্ঘ শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া অর্থাৎ ছোট ছোট শ্বাস ফেলা।
  • কিডনিতে সমস্যা হলে আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে এটিও একটি কিডনি ড্যামেজ হওয়ার লক্ষণ।
  • কিডনি ড্যামেজ হওয়ার আরেকটি লক্ষণ হল গরম আবহাওয়াও ঠান্ডা অনুভূত হবে।
  • সকল চিন্তা ভাবনা নেগেটিভ সেন্সে ভাবা কিংবা নিজের মধ্যে পজিটিভিটি কমে যাওয়া এটাও একটি লক্ষণ হতে পারে।
এখানে মোটামুটি সব কিডনি ড্যামেজের লক্ষণগুলো (kidney damage er lokkhon) সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। আপনার এই সমস্যাগুলো হয়ে থাকলে আপনি অতি তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন এবং আপনার কিডনি পরীক্ষা করতে পারেন। নইলে আরো গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। তো এখন নিশ্চয়ই আপনি কিডনি ড্যামেজ এর লক্ষণ সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন।

কিডনিতে ইনফেকশন কেন হয় | কিডনি ইনফেকশন হলে করণীয়

কিডনিতে ইনফেকশন কেন হয় বা কিডনি ইনফেকশন হলে করণীয় কি? এখন এই সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব। কিডনি মানবদেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে হলে কিডনি ভালো রাখতে হবে। কিডনিতে ইনফেকশন হয় বিভিন্ন কারণে। কিডনিতে ইনফেকশন কেন হয় এই প্রশ্নের জবাবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে, দীর্ঘ সময় ধরে প্রসাব আটকে রাখার ফলে কিডনিতে ইনফেকশন দেখা দিতে পারে। 

এটি মূলত কিডনি ইনফেকশনের প্রধান কারণ কেননা আমরা জানি, মূত্রে ইউরিয়া, ইউরিন এবং ক্রিয়েটেনিন সহ আরো বিভিন্ন রকম পদার্থ থাকে যা মূত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে যায়। কিন্তু আমরা যদি এই মূত্রকে দীর্ঘক্ষণ ধরে আটকে রাখি বা চেপে রাখি তাহলে শরীরে এই পদার্থগুলোর বিরূপ প্রভাব পড়বে। যার ফলে আমাদের কিডনির ইনফেকশন সহ আরো মারাত্মক ধরনের কোন ক্ষতি হতে পারে। কাজেই, যখনই প্রসাব লাগবে তখনই প্রসব করা উচিত।

তাছাড়া মেয়েদের ঋতুস্রাবের সময় অনেকেই বিভিন্ন নোংরা কাপড় ব্যবহার করে থাকে। যেটা মোটেও ঠিক নয়। এর মাধ্যমেও জীবাণু আপনার শরীরে প্রবেশ করে কিডনির ইনফেকশন ছড়াতে পারে। কাজেই, সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় চোপড় ব্যবহার করতে চেষ্টা করবেন। এবার আসি কিডনি ইনফেকশন হলে করণীয় কি? চিকিৎসকরা কিডনি ইনফেকশন সারানোর জন্য প্রথমেই যে উপদেশ টি দিয়ে থাকেন সেটি হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে বলেন। 

প্রতিদিন গড়ে অন্তত সাত থেকে আট গ্লাস পানি পান করা উচিত কিডনি সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে। কফিতে থাকা অতিরিক্ত ক্যাফিন কিডনি ইনফেকশনের কারণ। কাজেই অতিরিক্ত কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এতে আপনার কিডনির ইনফেকশন থেকে বাঁচতে পারবেন। পাশাপাশি চিকিৎসকরা যেটা কড়া ভাবে নিষেধ করেন সেটি হচ্ছে অ্যালকোহল এবং ধূমপান। এগুলোর ধারের কাছেও না যাওয়াই ভালো হবে। কিডনির ইনফেকশন হলে এগুলো তো খাওয়া যাবেই না বরং কিডনি সুস্থ থাকতেও এগুলো খাওয়া উচিত নয়।

কারণ অ্যালকোহল এবং ধূমপান মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত আপেলের জুস পান করলে কিডনি ইনফেকশন থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। তাই কিডনি ইনফেকশন হলে আপনি নিয়মিত আপেলের জুস খেতে পারেন। এটি আপনার কিডনি সংক্রমণ সারাতে অনেকাংশে সাহায্য করবে। কিডনি সংক্রমণে আরেকটি বিষয় ভূমিকা রাখে সেটি হচ্ছে ব্যথার ওষুধ। তাই কিডনি সংক্রমণ হলে কিংবা কিডনি সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে ব্যথার ওষুধ কে না বলুন।

খুবই প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে আপনি খেতে পারেন। তবে প্রতিনিয়ত ব্যথার ওষুধ না খাওয়াই ভালো। ডাক্তারেরা এই পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ব্যথার ওষুধ কিন্তু কিডনি ইনফেকশনের জন্য দায়ী। কাজেই, আপনার কিডনি ইনফেকশন হলে ব্যথার ওষুধ থেকে দূরে থাকুন। তো আশা করি এখন নিশ্চয়ই কিডনিতে ইনফেকশন কেন হয়? বা কিডনি ইনফেকশন হলে করনীয় কি? এই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝতে পেরেছেন।

কিডনি সমস্যার সমাধান (Solution for kidney problems) | কিডনি রোগ কি ভাল হয়

কিডনি সমস্যার সমাধান (kidney somossar somadhan) বা কিডনি রোগ কি ভাল হয়? এটি আজকের আর্টিকেলের প্রধান আলোচ্য বিষয়। আপনাদের আগেই জানিয়ে রাখি সঠিক চিকিৎসা হলে অবশ্যই কিডনি রোগ ভালো করা সম্ভব। এখন আরো উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি বের হয়েছে। এখন অনেকেই কিডনি ডায়ালাইসিস করার পাশাপাশি কিডনি প্রতিস্থাপনও করে নিচ্ছে। কাজেই, কিডনি রোগ অবশ্যই ভালো করা সম্ভব। 

কিডনি সমস্যার সমাধান (kidney somossar somadhan) নিয়ে এখন এই প্যারাগ্রাফে আমি আপনাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করব এবং কিভাবে কিডনি সমস্যার সমাধান (Solution for kidney problems) করা যায় সেই সম্পর্কে আলোচনা করব ইনশাল্লাহ। কিডনি সমস্যা একটি অতি পরিচিত এবং মারাত্মক সমস্যা।
বর্তমানে কিডনির সমস্যা বেড়েই চলেছে এর প্রধান কারণ হচ্ছে বিভিন্ন খাদ্যের ভেজাল। কিডনির সমস্যার সমাধানে আপনি ফল এবং শাকসবজি খেতে পারেন। আমাদের অনেকের ধারণা কিডনিতে সমস্যা হলে এগুলো খাওয়া যাবে না আসলে এ ধারণা ভুল। কিডনির সমস্যা নির্ধারণ করে আপনি পরিমাণ মতো সবকিছুই খেতে পারবেন। তবে চেষ্টা করবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রসালো শাকসবজি খেতে। আর অতিরিক্ত খাবার লবণ একেবারেই খাওয়া যাবেনা। 

এটি কিডনির মারাত্মক ক্ষতি করে। যেটা আপনি বুঝতেও পারছেন না। কাজেই, অতিরিক্ত খাবার লবণ থেকে বিরত থাকুন কিডনিকে ভালো করতে চাইলে। তাছাড়া কিডনির সমস্যার সমাধান করতে হলে আপনাকে আরো যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
  • প্রথমত ধূমপান করা যাবে না।
  • মদ্যপানের ধারের কাছেও ঘেঁষা যাবে না।
  • রক্ত চলাচল সঠিক রাখতে আপনাকে প্রতিদিন অন্তত আধা ঘন্টা হাঁটতে হবে। এটিও কিডনি সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
  • শরীরের ওজন অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। মাত্রাতিরিক্ত ওজন কিডনির সমস্যার কারণ।
  • ব্লাড প্রেসার এবং কোলেস্টেরল অবশ্যই স্বাভাবিক সীমার মধ্যে থাকতে হবে। তা না হলে কিডনি রোগ ভালো করা সম্ভব হবে না।
  • আর খাবারে সবসময় কম লবণ খাওয়ার চেষ্টা করবেন। মাত্রাতিরিক্ত লবণ খাওয়া পরিত্যাগ করুন।
  • কিডনি যেহেতু একটি সেনসিটিভ অঙ্গ। তাই সর্বদা চেষ্টা করবেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শক্রমে কিডনির চিকিৎসা করাতে।
  • কিডনির সমস্যা থেকে বাঁচতে আপনাকে প্রতি মাসে অন্তত একবার কিডনি চেকআপ করা প্রয়োজন। এতে কিডনির অবস্থা বোঝা যাবে আগের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে নাকি অবনতি হয়েছে।
  • মোটকথা, উপরোক্ত কাজগুলোর পাশাপাশি অবশ্যই আপনাকে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ক্রমে কিডনির চিকিৎসা করানো খুবই জরুরী।
এই ছিল মোটামুটি কিডনি রোগ সমস্যার সমাধান। সঠিক চিকিৎসা এবং খাদ্যাভাস মেনে চললে অবশ্যই কিডনি রোগ ভালো করা সম্ভব। তো এখন নিশ্চয় আপনার মনের প্রশ্ন সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন। কিডনির সমস্যা দূর করতে আপনি উপরোক্ত অভ্যাসগুলো এবং সেই সাথে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন। দেখবেন আপনার কিডনি আগের চেয়ে অনেক সুস্থ আছে।

কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় (How to understand if the kidneys are good) | কিডনি ভালো রাখার উপায়

কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় কি? (kidney valo ace kina bojhar upay ki) এটি হচ্ছে আজকে আমাদের আর্টিকেলের প্রধান আলোচ্য বিষয়। সাথে সাথে কিডনি ভালো রাখার উপায় কি? (kidney valo rakhar upay ki) এই নিয়েও বিস্তারিত একটা আলোচনা করার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ। আগেই বলেছি মানবদেহে দুটি কিডনি বা বৃক্ক রয়েছে। এর একটি নষ্ট হয়ে গেলে অপরটি সচল থাকে। কিংবা কারো ক্ষেত্রে দুটোই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তখন আরো মারাত্মক অবস্থায় সৃষ্টি হয় এমনকি শেষ পরিণতি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। 

একটি কিডনি বিকল এবং অপরটি সচল থাকলে সচল কিডনির উপর অনেক বেশি চাপ পড়ে। কাজেই, আমাদের চেষ্টা করতে হবে যাতে দুটো কিডনি সচল থাকে। এখন এই কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় কি? (kidney valo ace kina bojhar upay ki) বা কিডনি ভালো রাখার উপায় কি? (kidney valo rakhar upay ki) এ বিষয় নিয়ে এবারে বিস্তারিত জানা যাক। কিডনির কার্যক্ষমতা বুঝতে ইউরিয়া এবং সিরাম ক্রিয়েটেনিন টেস্ট করে দেখা হয়। কিডনির কার্যক্ষমতা যদি কম থাকে অর্থাৎ কিডনি বিকল থাকে তাহলে এই দুটি পরিমান অত্যন্ত বেড়ে যায়।

আপনার কিডনি ভালো থাকলে এই দুটির মাত্রা স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকবে। তখন আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার কিডনি ভালো আছে। এটি কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার একটি উপায়। কিডনি ভালো আছে কিনা তা বোঝার আরেকটি উপায় হচ্ছে মূত্র পরীক্ষা। আপনার কিডনি ভালো থাকলে মূত্র স্বাভাবিক হবে। ফেনাযুক্ত মূত্র হবে না বা মূত্রের সাথে রক্ত বের হবে না। সাথে সাথে প্রসব করার সময় জ্বালাপোড়াও হবে না। এগুলো না হলে বুঝতে পারবেন আপনার কিডনি স্বাভাবিক আছে। 

তাছাড়া যাদের ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ তাদের কিডনি বিকল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। কাজেই, এই বিষয়েও সাবধান থাকবেন। আপনার উপর উক্ত সমস্যাগুলো না থাকলে বুঝবেন আপনার কিডনি ভালো আছে। আরো নিশ্চিত হওয়ার জন্য অবশ্যই আপনি বছরে অন্তত দুবার কিডনি সহ পুরো শরীর চেকআপ করতে পারেন। এটা করা আমাদের সকলেরই প্রয়োজন। এবার আসি কিডনি ভালো রাখার উপায় কি? (kidney valo ace kina bojhar upay ki) এই সম্পর্কে কিছু জানতে। কিডনি ভালো রাখতে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারেরা প্রথমত যে পরামর্শ দিয়ে থাকেন সেটি হচ্ছে আপনাকে প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
যেটা কিডনি ভালো রাখার জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কিডনি দিয়ে রক্ত সারা দেহে প্রবাহিত হয় এবং বর্জ্য পদার্থ গুলো অপসারিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মোটকথা, বলতে পারি কিডনি আমাদের দেহে ছাকুনির মতো কাজ করে থাকে। কাজেই, এই কিডনিকে আমাদের সব সময় ভালো রাখা প্রয়োজন। যেহেতু ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীরা কিডনি সমস্যায় বেশি ভোগেন তাই আমাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন কিডনি ভালো রাখতে হলে। 

পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপকেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এটিও কিডনি ভালো রাখতে অত্যন্ত জরুরী একটি বিষয়। কিডনি ভালো রাখার উপায় (kidney valo rakhar upay ki) এর মধ্যে আরেকটি বিষয় রয়েছে সেটি হচ্ছে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা এবং কিডনি ভালো রাখার আরেকটি উপায় হল ধূমপান এবং মদ্যপান মোটকথা নেশা জাতীয় জিনিস না সেবন করা। এগুলো মেনে চললে আশা করা যায় যে আপনার কিডনি ভালো থাকবে ইনশাল্লাহ। তো আশা করি এখন কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় এবং কিডনি ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে ক্লিয়ার একটা ধারণা আপনি পেয়েছেন।

কিডনি রোগের ঔষধের নাম (kidney medicine name)

কিডনি রোগের ঔষধের নাম (kidney medicine name) সম্পর্কে আপনাদের একটু ধারণা দিই। কিডনি সমস্যা বর্তমানে একটি মারাত্মক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে একটু বয়স হয়ে গেলেই এই সমস্যাটি আরো বেশি দেখা যায়। কিডনি রোগের বিভিন্ন ওষুধ রয়েছে। তার মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকর ওষুধ সম্পর্কে সংক্ষেপে ধারণা দেওয়া হলো। কিডনি রোগের সমস্যার মধ্যে কিডনিতে পাথর অন্যতম। আর এই সমস্যার সমাধানে যে ট্যাবলেট টি ব্যবহার করা হয় সেটি হচ্ছে জ্যানোপিরল ট্যাবলেট (Zanopirol Tablet)। এছাড়াও কিডনি রোগের বিভিন্ন ওষুধ রয়েছে। কিডনি রোগের ঔষধের নাম নিচে দেওয়া হলঃ
  • লোসার্টান (Losartan)
  • অ্যামলোডিপাইন (Amlodipine)
  • ক্যালসিয়াম অ্যাসিটেট (Calcium Acetate)
  • ফুরোসেমাইড (Furosemide)
  • এরিথ্রোপয়েটিন (Erythropoietin)
এছাড়াও কিডনি রোগের আরো বিভিন্ন ওষুধ রয়েছে। আপনাদের জানার জন্য এগুলো এখানে উল্লেখ করলাম। তবে অবশ্যই পরামর্শ থাকবে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ গুলো খাবেন না। তার কারণ হলো আপনার কিডনির অবস্থা বুঝে তারপর আপনাকে ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। অযথাই যেকোনটি খেলে কোন লাভ হবে না। আশা করছি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।

শেষ কথা বা লেখকের মন্তব্য | কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায় - কিডনি সমস্যার সমাধান

আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদের কিডনি ভালো আছে কিনা তা বোঝার উপায় এবং কিডনির সমস্যার সমাধান সহ কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ এবং কিডনি সংক্রান্ত আরো যাবতীয় বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। এই আর্টিকেলে অত্যন্ত সহজ এবং সাবলীল ভাষায় কিডনি সংক্রান্ত বিষয়াদি বোঝানোর চেষ্টা করেছি। আমি আশা করছি আপনি বিষয়গুলো ভালোমতো বুঝতে সক্ষম হয়েছেন। এরপরেও যদি আপনার কোথাও বুঝতে কোন অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ব্যক্তিগতভাবে আমাকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। 

আমি যথাসাধ্য সাহায্য করার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ। আর এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার এতটুকুও উপকার হয়ে থাকে তাহলে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে অবশ্যই ভুলবেন না। তাদেরকেও কিডনির সমস্যার সমাধান সহ আরো যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দিন আপনার একটি শেয়ারের মাধ্যমে। তাদেরও বিষয়টি জানার অত্যন্ত প্রয়োজন। আর বিভিন্ন আপডেট এবং সঠিক তথ্য সবার আগে জানতে চাইলে এই ওয়েবসাইটটি (M.F. Hossain) নিয়মিত ভিজিট করুন ও এই ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন এবং ব্যক্তিগতভাবে আমাকে সাপোর্ট দিন। 

যাতে করে আমি উৎসাহিত হয়ে আপনাদের সামনে আরো নতুন কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারি। আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করি আপনাদের সামনে সঠিক তথ্য তুলে ধরতে এবং মানুষের কাছে সঠিক তথ্যটি পৌঁছে দিতে। তাহলে আজকে আর কথা না বাড়িয়ে আমার এই সংক্ষিপ্ত আলোচনার এখানেই ইতি টানছি। পরবর্তীতে কথা হবে আবার কোন নতুন বিষয় নিয়ে। ততক্ষণ পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এই কামনাই করি। পাশাপাশি আপনারাও আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন আমার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

M.F. Hossain ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url