রেশম চাষের ১০টি অর্থনৈতিক গুরুত্ব - রেশম চাষ হয় কোন জেলায় আপডেট তথ্য

রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে আমাদের অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগেই। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে জানার আগ্রহের আপনার অবসান ঘটবে। এর পাশাপাশি রেশম চাষের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কেও জানতে পারবেন। তাহলে রেশম রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব
রেশম চাষ সম্পর্কে ধারণা রাখা আমাদের সকলের জন্যই অতীব জরুরী। কারণ বর্তমানে রেশম চাষ নেই বললেই চলে। কিন্তু এর চাহিদা এবং অর্থনৈতিক গুরুত্ব পাশাপাশি প্রয়োজনীয়তাও খুব বেশি। কাজেই, এই আর্টিকেলটি আজকে সকলের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব

ভূমিকা | রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব

আজকের এই আর্টিকেলের প্রধান আলোচ্য বিষয় হচ্ছে রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব। সাথে সাথে রেশম চাষের প্রয়োজনীয়তা, রেশম চাষ হয় কোন জেলায়? রেশম শিল্প কোথায় বিখ্যাত? রেশম পোকার জীবন চক্র, রেশম পোকার বৈশিষ্ট্য, রেশম পোকা চাষ পদ্ধতি ও রেশম পোকার উপকারিতা সহ রেশম নিয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা করব ইনশাল্লাহ। কাজেই, এ আর্টিকেলটি আমাদের সকলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। আপনি এই সকল তথ্য তখনই জানতে পারবেন যখন এই আর্টিকেলটি পুরোপুরি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। তাহলে আমি আশা করব আপনি একজন সুপ্রিয় পাঠক হিসেবে এই তথ্যবহুল আর্টিকেলটি পড়ে রেশম চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান লাভ করবেন। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় ফেরা যাক।

রেশম চাষের প্রয়োজনীয়তা

রেশম চাষের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে প্রথমে আমরা জেনে নিই। বর্তমান সময়ে রেশম চাষের প্রয়োজনীয়তা খুব বেশি। কিন্তু সেই অনুযায়ী আমাদের দেশে রেশম চাষ হয় না। রেশম চাষে এখন অনেক লাভবান হওয়া সম্ভব। আমাদের দেশে যে পরিমাণ রেশমের প্রয়োজন সেই অনুযায়ী রেশম চাষ হয় না। ফলে রেশমের অনেক ঘাটতি দেখা যায়। রেশমের ঘাটতি দূরীকরণের জন্য আমরা চাইলে রেশম চাষ শুরু করতে পারি। যেহেতু রেশম এর ব্যাপক চাহিদা বর্তমানে বেড়ে গিয়েছে এবং চাহিদা অনুযায়ী দেশে সেরকম উৎপাদিত হচ্ছে না সেক্ষেত্রে এই উদ্যোগটি আমাদের লাভবান করে তুলতে পারে। রেশমের ব্যাপক প্রয়োজনীয়তা থাকার জন্য আজকাল অনেকেই রেশম চাষ শুরু করছে। মূলত রেশম পোকা থেকে রেশম উৎপাদিত হয়ে থাকে।
এর জন্য প্রাথমিক পর্যায়ের কিছু ট্রেনিং প্রয়োজন। ট্রেনিং নেওয়ার পরে আপনি রেশম চাষ করে প্রচুর টাকা পয়সা ইনকাম করতে পারবেন। আর এই রেশমের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আশা করা যায় রেশমের চাহিদা আর কখনো কমবে না। কারণ রেশম বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যে জিনিসগুলো আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় সেগুলোও রেশম দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। আর নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের চাহিদা ক্রমান্বয়ে বাড়তেই থাকে। এ বিষয়টি আমরা সকলেই জানি। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস তৈরিতে যে পরিমাণ ব্যবহার করা প্রয়োজন তার অনেকাংশেই ঘাটতি থাকে। এজন্যই রেশম চাষের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছ। আশা করি রেশম চাষের প্রয়োজনীয়তা বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।

রেশম চাষ হয় কোন জেলায়

এখন আমরা জানবো রেশম চাষ হয় কোন জেলায়? আমাদের মনে অনেকেরই প্রশ্ন জাগে রেশম চাষ হয় কোন জেলায়? রেশম মোটামুটি প্রায় সব জেলাতেই চাষ করা হয়। কিন্তু যে পরিমাণ রেশমের চাহিদা সে পরিমাণ রেশম চাষ করা হয় না। রেশম চাষের জন্য বিখ্যাত জেলা হল রাজশাহী জেলা। বাংলাদেশের বেশিরভাগ রেশম উৎপাদিত হয় রাজশাহী জেলায়। এর পাশাপাশি চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, পঞ্চগড় এবং গাজীপুর জেলায় কিছু সংখ্যক রেশম চাষ করা হয়। যেটা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এজন্যই বাংলাদেশে রেশমের ঘাটতি দেখা যায়। যদি প্রত্যেকটা জেলায় চাহিদা মোতাবেক রেশম চাষ করা হতো তবে রেশমের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হতো।
রেশম চাষের জন্য আমাদের সকলকেই উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত। বর্তমানে রেশম এর যেমন চাহিদা এবং প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তার পাশাপাশি রেশমের দামও ভালো রয়েছে। কাজেই, আমাদের রেশম চাষের প্রতি মনোযোগী হওয়া উচিত। বাংলাদেশের যত জেলা আছে সকল জেলার মধ্যে রাজশাহী জেলাতে সবচেয়ে বেশি রেশম চাষ হয়ে থাকে। রাজশাহী জেলার মতো অন্যান্য জেলাতেও এরকম রেশম চাষ হলে রেশমের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। আশা করি রেশম চাষ হয় কোন জেলায় বিষয়টি জানতে পেরেছেন।

রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব

রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে এবার আমরা বিস্তারিত জানবো। বর্তমান সময়ে রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব খুবই অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রেশম চাষ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। রেশম চাষ করে নিজেও যেমন স্বাবলম্বী হওয়া যায় তেমনি অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা যায়। কাজেই, আমাদের রেশম চাষের প্রতি উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন। বর্তমান সময়ে রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব খুব বেশি। আমাদের মত স্বল্প উন্নতির দেশে রেশম চাষ করা খুবই লাভজনক একটি উপায় হতে পারে।

বিশেষ করে যারা গ্রামে গঞ্জে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করে তারা রেশম চাষ করে যেমন নিজের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন করতে পারে তেমনি দেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। রেশম চাষ দারিদ্র্য বিমোচনের সাহায্য করে। এক্ষেত্রে আমাদের সকলেরই রেশম চাষের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা উচিত। রেশম চাষ করতে খুব একটা টাকা পয়সার প্রয়োজন হয় না। আপনি অল্প কিছু টাকা বিনিয়োগ করে রেশম উৎপন্ন করে সেখান থেকে ভালো মানের টাকা পয়সা ইনকাম করতে পারবেন। যেহেতু রেশম এর চাহিদা বাংলাদেশে ব্যাপক পরিমাণে রয়েছে এবং এর দামও রয়েছে ভালো পরিমানে।
তাহলে আর দেরি না করে চলুন আমরা রেশম চাষের প্রতি গুরুত্ব দেই এবং দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা পালন করি। বর্তমান সময়ে অনেক শিক্ষিত যুব সমাজ লেখাপড়ার পাশাপাশি রেশম চাষের গুরুত্ব দিচ্ছে। এতে করে যেমন তার টাকা-পয়সাও ইনকাম হচ্ছে পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তাহলে আমরা কেন পিছিয়ে থাকবো? আমাদের উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত। এতক্ষণ আপনাদের রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত বোঝানোর চেষ্টা করলাম। আশা করছি এই আর্টিকেলটি পড়ে রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।

রেশম চাষ নিয়ে এক কথায় কিছু উত্তর

রেশম শিল্প কোথায় বিখ্যাতঃ বাংলাদেশের রাজশাহী জেলায় রেশম শিল্প সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত। তাছাড়া ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও রেশম শিল্পের কদর রয়েছে। আশা করি রেশম শিল্প কোথায় বিখ্যাত? জানতে পেরেছেন।

রেশম পোকার জীবন চক্রঃ রেশম পোকার জীবন চক্র মূলত চারটি পর্যায়ে ঘটে থাকে। রেশম পোকার জীবন চক্র নিম্নরূপঃ
  • প্রথমে ডিম থেকে শুরু।
  • তারপর শূটকিটে পরিণত হওয়া।
  • শুটকিট পরবর্তী দশা মূটকিট।
  • সর্বশেষে পূর্ণাঙ্গ পোকায় পরিণত হয়।
এটিই হলো রেশম পোকার জীবনচক্র। আশা করি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।

রেশম পোকার উপকারিতাঃ রেশম পোকার উপকারিতা অনেক রয়েছে। রেশম পোকা থেকে যে রেশম উৎপন্ন হয় সেটি দিয়ে আমাদের পোশাক থেকে শুরু করে ঘর গোছানোর সামগ্রী এবং আকর্ষণীয় সব জিনিসপত্র তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। যেটি আমাদের জন্য খুবই উপকারী।

রেশম পোকার বৈশিষ্ট্যঃ রেশম পোকার বৈশিষ্ট্য হল এটি আর্থোপোডা পর্বের প্রাণী। রেশম পোকার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এর শরীর থেকে লালা গ্রন্থির মাধ্যমে যে রস নিশ্চিত হয় সেটি সুতায় পরিণত হয়। যেটি এর অনন্য বৈশিষ্ট্য এবং এই বৈশিষ্ট্যটি থাকার জন্য এটি অন্যান্য পোকার চেয়ে আলাদা।

রেশম পোকা চাষ পদ্ধতিঃ রেশম পোকা চাষ পদ্ধতিকে সেরিকালচার বলা হয়। এর ভেতর সেরিসিন নামক এক ধরনের প্রোটিন রয়েছে। সেরিসিন হলো রেশমের গঠনগত মূল উপাদান। এই সেরিসিন নামক প্রোটিন প্রস্তুতির মাধ্যমে লালন-পালন করার ব্যবস্থা কে রেশন পোকা চাষ পদ্ধতি বলা হয়। আর এই পুরো প্রক্রিয়াটিই সেরিকালচার নামে পরিচিত।

শেষ কথা বা লেখকের মন্তব্য | রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব

আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদের রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব এই বিষয়টি বিস্তারিত বুঝানোর চেষ্টা করেছি। এই আর্টিকেলের রেশম চাষ সম্পর্কে সকল বিষয় বিস্তারিত ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আশা করছি এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি সকল বিষয় বুঝতে পেরেছেন। তবুও যদি কোথাও বুঝতে অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাকে জানাতে পারেন। আমি যথাযথ চেষ্টা করব আপনার সমস্যার সমাধান করার জন্য। আর এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি একটি বিষয়ও শিখেছেন বলে মনে হয় তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে শেয়ার করবেন। তাদেরও বিষয়টি জেনে রাখা প্রয়োজন। কারণ রেশম চাষের গুরুত্ব দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে।

এরকম সকল বিষয়ে আপডেট খবর সবার আগে জানতে চাইলে আমার এই ওয়েবসাইটটি (M.F. Hossain) নিয়মিত ভিজিট করুন এবং ব্যক্তিগতভাবে আমাকে সাপোর্ট প্রদান করুন। আপনাদের সাপোর্টের জন্য উৎসাহিত হয়ে আমি যেন আরো নতুন নতুন তথ্য আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে পারি। আমি চেষ্টা করি সব সময় সঠিক তথ্য দিয়ে আপনাদের পাশে থাকার জন্য। তাহলে আজকে আর কথা না বাড়িয়ে আমার এই সংক্ষিপ্ত আলোচনার এখানেই সমাপ্তি ঘোষনা করছি। কথা হবে আবার নতুন কোন টপিক নিয়ে। ততক্ষণ পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পাশাপাশি আমার জন্য দোয়া করবেন আল্লাহ যেন আমাকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেন। এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আসসালামু আলাইকুম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

M.F. Hossain ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url