ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ৬টি বিশেষ ব্যবহার - ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুবিধা অসুবিধা

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুবিধা অসুবিধা নিয়ে আজকে আমাদের আলোচ্য বিষয়। সাথে সাথে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির বৈশিষ্ট্য নিয়েও আলোচনা করা হবে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার (Use of virtual reality) এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুবিধা অসুবিধা (Advantages and Disadvantages of Virtual Reality) সম্পর্কে আমাদের সকলেরই জানা থাকা প্রয়োজন। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুবিধা অসুবিধা সম্পর্কে সম্পর্কে।
ভার্চুয়াল-রিয়েলিটির-ব্যবহার
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুবিধা অসুবিধা সহ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সংক্রান্ত আপনার মনের লুকিয়ে থাকা সমস্ত প্রশ্নের উত্তর আজকের এই আর্টিকেলে দেওয়ার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ। তো সমস্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে এই আর্টিকেলটি আপনাকে মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার - ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুবিধা অসুবিধা

ভূমিকা | ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার - ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুবিধা অসুবিধা

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, কথাটি শুনতে কেমন কল্পনার মত দেখায় তাই না? আসলেই তাই। আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের বলব ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি? ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার, ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুবিধা ও অসুবিধা, ভার্চুয়াল রিয়েলিটির বৈশিষ্ট্য, মানুষ কোন কাজে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করবে এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটির পরবর্তীতে নতুন রূপ কেমন হতে পারে এরকম আরো অনেক প্রশ্নের উত্তর আজকে এই আর্টিকেলে দেওয়ার চেষ্টা করব।

কাজেই, একজন বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ হিসেবে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। বিশেষ করে যারা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এই বিষয়ে আগ্রহ তাদের জন্য। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সম্পর্কে যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয় জানতে এই পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি | ভার্চুয়াল রিয়েলিটির অন্য নাম কি

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (Virtual reality) একটি ইংরেজি শব্দ। সংক্ষেপে একে VR বলে। সত্যিকার অর্থে বাস্তব নয়, কিন্তু বাস্তবের চিন্তা চেতনাকে বিজ্ঞান নির্ভর কল্পনার দ্বারা তুলে ধরাই হলো ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হলো মূলত একটি কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত প্রোগ্রাম যেখানে মানুষের কল্পনাকে কৃত্রিমভাবে তুলে ধরা হয়। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি মূলত সিমুলেশন তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির অন্য নাম হলো হাইপার রিয়েলিটি। বাংলায় একে অনুভবে বাস্তবতা, কল্প বাস্তবতা বা অসদ বাস্তবতাও বলা হয়ে থাকে।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জনক কে | ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কত সালে আবিষ্কার হয়

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি এখন আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। তো চলুন এখন জেনে নেয়া যাক ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জনক কে কিংবা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কত সালে আবিষ্কার হয় এই সম্পর্কে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি তথা এই কল্প বাস্তবতার জিনিসটি সত্যিই একটি অসাধারণ আবিস্কার। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন জেরন লেনিয়ার (Jaron Lanier)। তিনি মূলত একজন হ্যাকার ছিলেন। এরপর সর্বপ্রথম ভার্চুয়াল রিয়েলিটি আবিষ্কার করা হয় ১৯৬১ সালে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি আবিষ্কার করেন মর্টন এল হিলিগ (morton Leonard Heilling)। তিনি সেন্সুরামা সিমুলেটর নামক যন্ত্রের মাধ্যমে সর্বপ্রথম ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এই বিষয়টি আবিষ্কার করেন। এটি মূলত সিমুলেশন তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির বৈশিষ্ট্য কোনটি | ভার্চুয়াল রিয়েলিটির উপাদান সমূহ

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অসাধারণ এই জিনিসটির কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রধানত কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত প্রোগ্রাম দ্বারা পরিচালিত হয় এবং সিমুলেশন তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রধান বৈশিষ্ট্যের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এটি আপনাকে কল্পনায় বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণের আনন্দ দেবে। কিংবা আপনি যদি বিমান কিংবা কার ড্রাইভিং করতে সক্ষম না হন তবে এটাও এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আপনি শিখতে পারবেন। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির বৈশিষ্ট্যের মধ্যে এটি অন্যতম। কোনরকম স্বাস্থ্য ঝুঁকি ছাড়াই আপনি ড্রাইভিং শিখতে পারবেন।
তাছাড়া আরো যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা রয়েছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে।এবার চলুন আপনাদের ভার্চুয়াল রিয়েলিটির উপাদানসমূহ সম্পর্কে একটু বলি। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির উপাদান সমূহের মধ্যে প্রথমে যেটি রয়েছে সেটি হচ্ছে মাথায় পরতে হবে হেড মাউন্টেড ডিসপ্লে (Head Mounted Display), হাতে ব্যবহার করতে হবে ডেটা গ্লোব (Data Glove) পুরো শরীরে পরতে হবে পূর্ণাঙ্গ বডি স্যুইট (Body Suit) এবং চোখে বিশেষ চশমা ব্যবহার করতে হবে। এই উপাদানগুলো ভার্চুয়ালি রিয়েলিটিতে ব্যবহৃত হয় । তো আশা করি বিষয়গুলো বুঝতে পেরেছেন।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার | প্রাত্যহিক জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রভাব

আজকে এই আর্টিকেলের মূল যে বিষয়টি অর্থাৎ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার নিয়ে এই প্যারাগ্রাফে বিস্তারিত আলোচনা করছি। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির বিভিন্ন ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে নিচের লেখাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির বহুল ব্যবহার রয়েছে তার মধ্যে প্রধান যে বিষয়গুলো সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলোঃ

শিক্ষা ক্ষেত্রেঃ শিক্ষা ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একজন শিক্ষার্থীকে মুখে বলে যতটা বুঝানো সম্ভব কিন্তু সেই সঙ্গে যদি তাকে সেই জিনিসটার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় তাহলে সে খুব তাড়াতাড়ি বুঝবে। চলুন একটা উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টা বুঝিয়ে বলি। মনে করুন, ভূগোল ক্লাসে শিক্ষক আপনাকে কোন দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে বর্ণনা দিচ্ছেন। যে দর্শনীয় স্থানে শিক্ষক ঘুরে এসেছেন কিন্তু যে শিক্ষার্থীকে বলছে সে কখনো সে জায়গায় যায়নি। এতে করে সেই দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে শিক্ষার্থী খুব একটা ভালো বুঝতে পারবে না।

তার কারণ হলো সে জায়গায় ঘোরার তার অভিজ্ঞতা নাই। কিন্তু সেই একই কাজ যদি কোন ভিডিও দেখানোর মাধ্যমে বলা হতো তাহলে সে শিক্ষার্থী খুব সহজেই বুঝতে পারত এবং সেই দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করার অনুভূতিটাও পেত। এই যে অনুভূতি পাওয়াটা এটা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ছাড়া সম্ভব নয়। কারণ দেখুন প্রকৃতপক্ষে কিন্তু শিক্ষার্থী সে জায়গায় যায়নি কিন্তু তাকে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত এমন এক পরিবেশ সৃষ্টি করে দেওয়া হয়েছে যাতে করে সে সত্যিই মনে করছে সে দর্শনীয় স্থানটি ঘুরে বেড়াচ্ছে।
এই অনুভূতিটা পাওয়ার জন্য তাকে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির যাবতীয় উপাদান পরিধান করাতে হবে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির উপাদান সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। তাছাড়া শিক্ষাক্ষেত্রে আরো এর ব্যবহার রয়েছে। আমরা নিশ্চয়ই প্রাচীন ধ্বংসাবশেষের নাম শুনেছি। যেমনঃ হিরোশিমা এবং নাগাসাকির কথা আমরা সবাই জানি। কিন্তু খুব কম জনই আছি যে সেখান থেকে আমরা ঘুরে এসেছি। এখন সেই ধ্বংসাবশেষের স্থান ঘুরে এবং আসল অনুভূতি পাওয়ার জন্য যে বিষয়টি প্রয়োজন হবে সেটি হচ্ছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি। এই বিষয়গুলো সব শিক্ষনীয় বিষয়। যেগুলো আমরা ইতিহাস থেকে পড়ি। এগুলো হলো ভার্চুয়াল রিয়েলিটির অন্যতম ব্যবহার।

চিকিৎসা ক্ষেত্রেঃ চিকিৎসা ক্ষেত্রেও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার যথেষ্ট লক্ষ্য করা যায়। চিকিৎসা ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যাপক ব্যবহার নতুন এক বিপ্লবের জন্ম দিয়েছে। এখন চিকিৎসকরা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে জটিল সার্জারি সম্পূর্ণ করছেন। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সিমুলেশন এর ত্রিমাত্রিক ইমেজ ব্যবহার করে মানবদেহের ভেতরে বিভিন্ন ছবি তোলা হয় যাতে করে সে রোগ সম্পর্কে আরো ভালো মতো জানা যায়। তাছাড়া ভার্চুয়াল রিয়েলিটি নতুন রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে জানতেও সাহায্য করছে।

একজন নতুন চিকিৎসককে অস্ত্রপচার বিষয়টি শিখানোর আগে যদি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে সেই অস্ত্রোপচারের একটা পরিবেশ সৃষ্টি করা হয় তাহলে সে নতুন চিকিৎসকের একটু অভিজ্ঞতা হবে এবং পরবর্তীতে তার সঠিক অস্ত্রোপচারে সুবিধা হবে। তাছাড়া নতুন রোগের চিকিৎসা পদ্ধতিও ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে শেখা সম্ভব হচ্ছে। এতে করে রোগীর স্বাস্থ্য ঝুঁকিও কমে যাচ্ছে। এটি চিকিৎসা ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহারের মধ্যে অন্যতম।

সামরিক প্রশিক্ষণেঃ সামরিক প্রশিক্ষণে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একজন সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের জন্য তৈরি করতে হলে যথেষ্ট পরিশ্রমের প্রয়োজন হয়। আর এক্ষেত্রে তো অস্ত্রবিদ্যায় পারদর্শী হতে হয়। কাজেই, প্রথমে যদি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে অস্ত্রবিদ্যা সম্পর্কে পারদর্শী হয় তাহলে পরবর্তীতে খুব একটা সমস্যা হয়না।

মূলত ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে কম্পিউটার প্রোগ্রামের দ্বারা একটা ঘরের মধ্যে যুদ্ধের মত পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়। এরপর সেই সৈনিককে সেখানে অস্ত্রবিদ্যায় পারদর্শী করা হয়। প্রকৃতপক্ষে বাস্তব নয় কিন্তু সেই সৈনিক যদি ভার্চুয়াল রিয়েলিটির উপাদান গুলো পরে তবে তার মনে হবে সে সত্যিই যুদ্ধক্ষেত্রে আছে। এতে করে তার ট্রেনিংও সম্পন্ন হবে এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকেও বেঁচে যাবে। কাজেই, সামরিক ক্ষেত্রেও ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রচুর ব্যবহার রয়েছে।

গবেষণা ক্ষেত্রেঃ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার গবেষণা ক্ষেত্রেও রয়েছে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি আবিষ্কারের ফলে গবেষণা ক্ষেত্রে বিপ্লব সাধন হয়েছে। এখন বিজ্ঞানীরা জটিল জটিল গবেষণার কাজ করার পূর্বে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নিয়ে তারপর মূল গবেষণায় ফিরে যান। এতে করে সময় সাশ্রয় হয়। গবেষণার ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ভালো ব্যবহার গবেষণা ক্ষেত্রেকে আরও এক ধাপ সামনে এগিয়ে নিতে সাহায্য করেছে। যেটা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি আবিষ্কারের পূর্বে সম্ভব ছিল না। কাজেই, দেখা যাচ্ছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির উত্তম ব্যবহার গবেষণা ক্ষেত্রেও বিদ্যমান।

খেলাধুলার ক্ষেত্রেঃ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার খেলাধুলার ক্ষেত্রেও লক্ষণীয়। চলুন একটা উদাহরণের মাধ্যমে আপনাদের বিষয়টা বোঝানোর চেষ্টা করি। ধরুন আপনি বক্সিং খেলা জানেন না। যেহেতু বক্সিং খেলা শরীরের সাথে সম্পর্কিত এবং ভুল কিছু করে ফেললে আপনার হাত-পা ভেঙেও যেতে পারে। এক্ষেত্রে যদি ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে বক্সিং খেলার পরিবেশ পরিবেশ সৃষ্টি করে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নেওয়া যায় তাহলে স্বাস্থ্য ঝুকি অনেকাংশেই কমানো সম্ভব। তাহলে দেখা যাচ্ছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি  খেলাধুলার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হচ্ছে।

পোশাক শিল্পেঃ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার শিল্প ক্ষেত্রেও লক্ষ্য করা যায়। শিল্প তথা পোশাকশিল্পে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রচন্ড ব্যবহার শিল্প ব্যবস্থাকে আরো একধাপ সামনে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। বিষয়টি বুঝিয়ে বলছি। গার্মেন্টসে যে শ্রমিক গুলো কাজ করে প্রাথমিক অবস্থায় তাদের কাজ শেখাতে দক্ষ ট্রেইনারের প্রয়োজন হয়। এর পরিবর্তে আপনি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করতে পারেন। 

এতে করে ট্রেনারের প্রয়োজন হবেনা। সময়ও যথেষ্ট সাশ্রয় হবে। পোশাক কাটা ,মাপ যোগ থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ যদি ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয় তাহলে একজন শ্রমিক খুব সহজেই ভালোমতো বুঝতে পারবে। কাজেই, দেখা যাচ্ছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার শিল্প ক্ষেত্রেও লক্ষ্য করা যায়।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুবিধা অসুবিধা | ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব

আজকে এই আর্টিকেলের প্রধান বিষয়ের আরেকটি হচ্ছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুবিধা অসুবিধা। এই প্যারাগ্রাফে আমি আপনাদের ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুবিধা অসুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ। তো ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুবিধা অসুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুবিধা বা ইতিবাচক প্রভাবঃ এই পর্বে আমি ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করব। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুবিধা তথা ইতিবাচক প্রভাব মানব জীবনে লক্ষণীয়। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি আবিষ্কারের ফলে মানুষের কাজকর্মে মাধুর্যতা এসেছে এবং সব কাজ খুব তাড়াতাড়ি সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে। এটি একটি ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুবিধা বা ইতিবাচক প্রভাব। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির আরেকটি সুবিধা বা ইতিবাচক প্রভাব হচ্ছে এটি অবশ্য এই স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে মুক্ত।

যে কাজগুলো অত্যন্ত জটিল ছিল তা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি আবিষ্কারের পরে অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কাজগুলো স্বাস্থ্য ঝুঁকি ছাড়াই সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে। প্রত্যহিক জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ইতিবাচক প্রভাবের মধ্যে এটি অন্যতম। তাছাড়া শিক্ষা এবং গবেষণায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যাপক সুবিধা দিচ্ছে। গবেষকরা ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার করে খুব তাড়াতাড়ি একটা গবেষণার কাজ সমাধান করতে পারছে। এতে করে সময় অনেক সাশ্রয় হচ্ছে। যেটা খুবই প্রয়োজনীয়।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুবিধা এবং প্রত্যাহিত জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ইতিবাচক প্রভাব বিষয়টি বোঝানোর জন্য আরেকটি ছোট্ট উদাহরণ দিই। ধরুন আপনি কার ড্রাইভিং পারেন না। তাহলে কার ড্রাইভিং শিখতে হলে আপনাকে অবশ্যই নিজে ড্রাইভ করতে হবে। এতে করে প্রাথমিক অবস্থায় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকতেই পারে। কিন্তু আপনি যদি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে কার ড্রাইভিং এর কৃত্রিম পরিবেশ সৃষ্টি করেন তাহলে সেই দুর্ঘটনাটা এড়ানো সম্ভব। তো আশা করি বুঝতে পেরেছেন ভার্চুয়াল রিয়েলিটির অনেক সুবিধা এবং প্রত্যাহিক জীবনের ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির অসুবিধা বা নেতিবাচক প্রভাবঃ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির অসুবিধা বা নেতিবাচক প্রভাবও লক্ষণীয়। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির যেমন সুবিধা রয়েছে তেমনি ভার্চুয়াল রিয়েলিটির অসুবিধা বা নেতিবাচক প্রভাবও রয়েছে। তো চলুন আপনাদের বলি ভার্চুয়াল রিয়েলিটির নেতিবাচক প্রভাব তথা অসুবিধা গুলো কি? ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রধান যে অসুবিধা বা নেতিবাচক প্রভাব তা হচ্ছে এই প্রযুক্তি ব্যবহার অত্যন্ত ব্যয়বহুল। যা সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। 

এই যন্ত্রে যে জিনিসপত্র ব্যবহার করা হয় তা অত্যন্ত দামি হওয়ায় সাধারণ মানুষ এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে সক্ষম হবে না। এটা হল ভার্চুয়াল রিলেটির প্রধান অসুবিধা বা নেতিবাচক প্রভাব। তাছাড়া ভার্চুয়াল রিয়েলিটির আরো কিছু নেতিবাচক প্রভাব বা অসুবিধা রয়েছে।
যেহেতু ভার্চুয়াল রিয়েলিটি তে অবাস্তব চিত্র মানুষের সামনে উপস্থাপন করা হয় এতে করে মানুষের মস্তিষ্কে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতানুসারে, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে মানুষ বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে সরে যেতে পারে। তাছাড়া ভার্চুয়াল রিয়েলিটির দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার মানুষের চোখের মারাত্মক ধরনের ক্ষতি করতে পারে। 

এর পাশাপাশি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি তে যে শব্দ ব্যবহার করা হয় তা দীর্ঘক্ষণ শোনার পরে মানুষের কানের সমস্যা হতে পারে এবং খুব তাড়াতাড়ি কানে কম শুনতে পারে। এগুলো হলো ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহারের অসুবিধা বা প্রত্যাহিক জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির নেতিবাচক প্রভব। তো আশা করছি ভার্চুয়াল রিয়েলিটির অসুবিধা এবং মানব জীবনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝতে পেরেছেন।

শেষ কথা বা লেখকের মন্তব্য | ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার - ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সুবিধা অসুবিধা

আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদের ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার এবং ভার্চুয়াল রিলেটির সুবিধা অসুবিধা সহ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি সংক্রান্ত অনেক বিষয় সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করেছি। আমি আশা করছি আপনি এখন ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এই বিষয়ে পুরোপুরি ক্লিয়ার একটা ধারণা পেয়েছেন। এরপরেও যদি কোথাও বুঝতে অসুবিধা হয় তাহলে বিস্তারিত জানাতে পারেন। আমি যথাসাধ্য সাহায্য করার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ। 

নিয়মিত নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে এই ওয়েবসাইটটির (M.F. Hossain) সাথেই থাকুন। আর এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার এতটুকুও উপকার হয়ে থাকে তবে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করে তাদেরকেও এ বিষয় সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দিন। এই বলে আমি আমার সংক্ষিপ্ত আলোচনার এখানেই ইতি টানছি। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ সবাইকে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

M.F. Hossain ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url