ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম সম্পূর্ণ ঘরোয়া পদ্ধতিতে
ফ্রিজ আমাদের প্রতিদিনের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। খাবার টাটকা রাখা থেকে শুরু করে দুধ, মাছ, মাংস বা ফলমূল সংরক্ষণ সবকিছুতেই ফ্রিজের গুরুত্ব অসীম। আজ আমরা সম্পূর্ণ ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম নিয়ে আলোচনা করব।
আমরা অনেকেই ফ্রিজ ব্যবহার করি ঠিকই, কিন্তু সেটি পরিষ্কার করা নিয়ে তেমন একটা গুরুত্ব দিই না। ফলে একসময় এর ভেতরে জমে যায় বরফ, ছড়ায় বাজে গন্ধ, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকও জন্ম নিতে পারে। তাই নিয়মিত ও সঠিকভাবে ফ্রিজ পরিষ্কার করা শুধু স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য নয়, বরং ফ্রিজের স্থায়িত্ব রক্ষা করতেও গুরুত্বপূর্ণ।
অনেকেই ভাবেন ফ্রিজ পরিষ্কার করা একটি ঝামেলার কাজ। কিন্তু যদি আপনি জানেন ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম এবং তা ঘরোয়া পদ্ধতিতে কীভাবে সহজে করা যায়, তাহলে এটি মোটেও কঠিন মনে হবে না। কোনো দামি ক্লিনিং প্রোডাক্ট ছাড়াই ঘরে থাকা সাধারণ উপাদান দিয়েই আপনি আপনার ফ্রিজকে করে তুলতে পারেন একেবারে ঝকঝকে ও জীবাণুমুক্ত। এই আর্টিকেলে আমরা জানব কীভাবে সম্পূর্ণ ঘরোয়া উপায়ে, আপনার ফ্রিজকে সবসময় টাটকা ও পরিষ্কার রাখতে পারেন।
ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম, নতুন ফ্রিজ চালু করার নিয়ম
সুপ্রিয় পাঠক, আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম এবং নতুন ফ্রিজ চালু করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। এর সাথে সাথে ফ্রিজ ব্যবহারের সুবিধা, ফ্রিজ ব্যবহারের অসুবিধা এবং ফ্রিজ কিভাবে কাজ করে এই বিষয়গুলো সহ ফ্রিজ সম্পর্কে আরো যাবতীয় বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন ইনশাল্লাহ। কাজেই, আজকের এই আর্টিকেলটি আমাদের প্রত্যেকের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। বিশেষ করে আমরা যখন নতুন ফ্রিজ কিনি তখন অনেক প্রশ্ন মনে জাগে, তাই না? আজকের এই আর্টিকেলটি পড়লে ফ্রিজ সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস। এত সব তথ্য জানার জন্য এই তথ্যবহুল আর্টিকেলটি আপনাকে পুরোপুরি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তাহলে আমি আশা করব আপনি একজন সুপ্রিয় এবং বিশ্বস্ত পাঠক হিসেবে এই আর্টিকেলটি পড়বেন এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যাবতীয় জ্ঞান লাভের চেষ্টা করবেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আজকের মূল আলোচনা শুরু করি।
ফ্রিজ ব্যবহারের সুবিধা
ফ্রিজ ব্যবহারের সুবিধা সম্পর্কে আমরা অনেকেই প্রশ্ন করে থাকি। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি ফ্রিজ ব্যবহারের যাবতীয় সুবিধার সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাবেন। আজকাল প্রায় সকলের বাড়িতেই ফ্রিজ রয়েছে। আমরা জানি, ফ্রিজ ব্যবহারের অনেক সুবিধা রয়েছে। যেই সুবিধাগুলো সম্পর্কে আমাদের প্রত্যেকেরই ধারণা রাখা একান্ত প্রয়োজন। ফ্রিজের প্রথমত অসুবিধা হলো খাবার খাওয়ার পরে যখন অতিরিক্ত খাবার বেঁচে যায় সেটি ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করা হয়। যার ফলে সেই খাবারটি আর নষ্ট হয় না। মূলত ফ্রিজ ব্যবহারের সব সুবিধা গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। আবার ফ্রিজের মধ্যে শীতল পরিবেশ ফলমূল এবং শাকসবজিকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। যে ফলমূল এবং শাকসবজি গুলো ফ্রিজে না রাখলে এরকম সতেজ পাওয়া সম্ভব হতো না। এটিও ফ্রিজ ব্যবহারের একটি বড় সুবিধা। আবার বিভিন্ন মৌসুমে আমরা বিভিন্ন রকম ফল খেয়ে থাকি।
আরো পড়ুনঃ মোবাইল চার্জ দেওয়ার নিয়ম এবং মোবাইল চার্জ না হলে করনীয় কি তা জেনে নিন
এই ফলগুলো যদি ফ্রিজে ভালোভাবে সংরক্ষণ করা হয় তবে মৌসুম ব্যতীত অন্যান্য সময়ও সেই ফলগুলো খাওয়া যেতে পারে। এটিও ফ্রিজ ব্যবহারের অন্যতম একটি সুবিধা। আবার আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা অনেক ব্যস্ত সময় পার করেন। তারা একেবারে অনেক বাজার সদাই করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রেখে দিলে সেটি দীর্ঘদিন ভালো থাকে। এটিও ফ্রিজ ব্যবহারের আরেকটি বড় সুবিধা। আবার দেখা যায় কোরবানি ঈদের সময় একসাথে অনেকগুলো মাংস জমা হয়। সেই মাংসগুলো সংরক্ষণেও ফ্রিজ অনেক সুবিধা বহন করে থাকে। মোটকথা, সবকিছু সংরক্ষণে ফ্রিজের ভূমিকা অপরিসীম। এতক্ষণ আপনাদের সাথে ফ্রিজ ব্যবহারের যাবতীয় সুবিধা নিয়ে আলাপ আলোচনা করলাম। আশা করছি বিষয়গুলো বুঝতে পেরেছেন।
ফ্রিজ ব্যবহারের অসুবিধা
ফ্রিজ ব্যবহারের অসুবিধা সম্পর্কে এখন আমাদের আলোচনার বিষয়। ফ্রিজ ব্যবহারের যেমন সুবিধা রয়েছে তেমনি কিছু অসুবিধাও লক্ষ্য করা যায়। আপনারা ইতিমধ্যে ফ্রিজ ব্যবহারের বিভিন্ন সুবিধা সম্পর্কে জেনে এসেছেন। এখন এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি ফ্রিজ ব্যবহারের অসুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। ফ্রিজের মধ্যে থাকা ঠান্ডা তাপমাত্রার জন্য পণ্যের গুণগত মান ঠিক থাকে না। হিমায়ন প্রক্রিয়ায় মূলত ভিটামিন-বি এবং ভিটামিন-সি নষ্ট হয়ে যায়। কাজেই, এটি ফ্রিজ ব্যবহারের একটি বিশাল অসুবিধা। আবার ফ্রিজে বিভিন্ন ফলমূল রাখার ফলে এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অনেক কমে যায়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কমে যাওয়া এটিও একটি ফ্রিজ ব্যবহারের অনেক বড় অসুবিধা। আবার ফ্রিজে বিভিন্ন শাকসবজি এবং নানা রকম জিনিস রাখার ফলে এর সংরক্ষণ ঠিকই হয় কিন্তু কার্যত যে গুণগত মান সেটি আর বজায় থাকে না।
মোটকথা, ফলমূল এবং শাকসবজি এবং আপনি যে জিনিসই ফ্রিজে সংরক্ষণ করেন না কেন তার গুণগত মান বজায় রাখা সম্ভব হয় না। এটিও ফ্রিজ ব্যবহারের একটি অসুবিধা। তাছাড়া দীর্ঘদিন ফ্রিজে রাখা খাবার খাওয়ার ফলে শরীরে নানা রকম জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে বলে চিকিৎসকের মতবাদ। যাদের অভ্যাস রয়েছে ফ্রিজে রাখা খাবার খাওয়ার তারা এই অভ্যাসটি অবশ্যই পরিবর্তন করে ফেলুন। কারন চিকিৎসকেরাই নিষেধ করে থাকেন ফ্রিজে রাখা খাবার না খাওয়ার জন্য। হঠাৎ ফ্রিজে রাখা খাবার খাওয়া খুব একটা সমস্যা না সৃষ্টি করলেও এই অভ্যাসটি রোজ রোজ করা ঠিক হবে না। অর্থাৎ আপনি যদি প্রতিনিয়ত ফ্রিজে রাখা খাবার খান এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ হতে পারে। এগুলোই হল মূলত ফ্রিজ ব্যবহারের নানা অসুবিধা। আশা করছি আপনি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।
ফ্রিজ কিভাবে কাজ করে
ফ্রিজ কিভাবে কাজ করে এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের অনেকের মাঝেই জানার আগ্রহ রয়েছে। আজকের আর্টিকেলটি পড়লে আপনি ফ্রিজ কিভাবে কাজ করে এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। ফ্রিজ মূলত বৈদ্যুতিক একটি যন্ত্র। ফ্রিজের মধ্যে থাকা অতি নিম্ন তাপমাত্রায় খাবারগুলো ঠান্ডা থাকে এবং দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। খাবারগুলো ঠান্ডা রাখার জন্য এবং দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার জন্য এর মধ্যে বিভিন্ন কম্প্রেসার ব্যবহার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়াও খাবারগুলোকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করার জন্য কম্প্রেসারের পাশাপাশি কন্ডেন্সার এবং এক্সপেনশন ভালভ সেই সাথে এভাপোরেটর ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফ্রিজের মধ্যে ঠান্ডা আবহাওয়া সৃষ্টির জন্য ঘন কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অবশ্য কার্বন-ডাই-অক্সাইড এর পাশাপাশি ক্লোরোফ্লোরো কার্বন বা সিএফসি গ্যাস ব্যবহৃত হয়।
আরো পড়ুনঃ নোকিয়া বাটন মোবাইল বাংলাদেশ প্রাইস এবং নোকিয়া কোন বাটন মোবাইল ভালো সেই সম্পর্কে জানুন
মানবদেহের জন্য সহনীয় এরকম গ্যাস ব্যবহার করা হয় ফ্রিজের দ্রব্যাদি ঠান্ডা রাখার জন্য। ফ্রিজের ভেতরে এই ঠান্ডা আবহাওয়া কয়েকটি প্রক্রিয়ায় প্রসেস হয়ে সৃষ্টি হয়। যার ফলে আমাদের সংরক্ষিত করা খাবারগুলো দীর্ঘদিন যাবত ভালো থাকে। ফ্রিজ এই ঠান্ডা করার কাজটি করে থাকে মূলত কয়েকটি ধাপে। আপনি প্রথমে ফ্রিজের মধ্যে যে খাবার বা দ্রব্যটি রাখবেন তার থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় তাপ চুষে নেওয়া হয় এবং এটিকে বাষ্পে পরিণত করা হয়। এই বাষ্পকে কম্প্রেসার এর মাধ্যমে প্রচন্ড চাপের সৃষ্টি করা হয়। তারপর এই চাপকে ব্যবহৃত কনডেন্সারের মাধ্যমে ঠান্ডা এবং তরলে পরিণত করা হয়। আর এই ঠান্ডা তরলটি ফ্রিজে ব্যবহৃত এক্সপেনশন ভালভের মধ্য দিয়ে ফ্রিজের ভেতরে প্রবেশ করানো হয়। ফ্রিজের মধ্যে এসে এই ঠান্ডাটি আরো বৃদ্ধি পায় এবং ফ্রিজের খাদ্যদ্রব্য গুলো ভালো থাকে। মূলত এই পদ্ধতিতেই ফ্রিজ কাজ করে থাকে। আশা করছি ফ্রিজের কাজ করার পদ্ধতি সম্পর্কে আপনাদের জানাতে সক্ষম হয়েছি এবং আপনারা বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।
নতুন ফ্রিজ চালু করার নিয়ম
নতুন ফ্রিজ চালু করার নিয়ম সম্পর্কে আমরা অনেকেই জিজ্ঞাসা করে থাকি। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনি নতুন ফ্রিজ চালু করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন। নতুন ফ্রিজ কেনার পরে আমাদের অনেকের মাঝে নতুন ফ্রিজ ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে প্রশ্ন জাগে। কিভাবে নতুন ফ্রিজ ব্যবহার করব? ইত্যাদি বিষয় সহ আরো নানারকমের প্রশ্ন আমাদের মনে নাড়া দেয়। আজকের এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনি নতুন ফ্রিজের ব্যবহার সহ কিভাবে ফ্রিজ ব্যবহার করবেন? ইত্যাদি বিষয়ে যাবতীয় ধারণা পাবেন ইনশাল্লাহ। নতুন ফ্রিজ চালু করার পরে ফ্রিজের বাইরের অংশ অর্থাৎ ফ্রিজের দুই পাশে প্রচন্ড গরম হবে। ভয়ের কোন কারণ নেই! ফ্রিজের বাইরের অংশ গরম হলেই ভেতরের অংশ ঠান্ডা হবে। এটা মূলত নতুন ফ্রিজের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এভাবে নতুন ফ্রিজ চালু করার পর অন্তত তিন থেকে চার ঘন্টা ফ্রিজ ফাঁকা রাখা অবস্থায় ঠান্ডা করে নিন।
এটি নতুন ফ্রিজ ব্যবহারের একটি বিশেষ নিয়মের মধ্যে পড়ে। এই তিন থেকে চার ঘন্টা ফ্রিজ চালাবেন সর্বোচ্চ পাওয়ার দিয়ে। আমরা এই বিষয়গুলো অনেকেই জানিনা। কিন্তু এগুলোই নতুন ফ্রিজ ব্যবহার করার সঠিক নিয়ম। আবার আমরা অনেকেই না জানার জন্য ফ্রিজের থ্রি পিন প্লাগ থাকার জন্য মাল্টিপ্লাগ ব্যবহার করি। এই কাজটি করাও একদম ঠিক হবে না। কারণ ফ্রিজে অনেক ভোল্টেজ টানে যেটা মাল্টিপ্লাগের পক্ষে সম্ভব না। ফ্রিজের লাইন অবশ্যই মেইন সুইচের লাইন থেকে নেওয়া উচিত। নতুন ফ্রিজ ব্যবহার করার পূর্বে এই বিষয়গুলো অবশ্যই একজনের জেনে রাখা একান্ত প্রয়োজন। আবার নতুন ফ্রিজ ব্যবহারের জন্য অবশ্যই ভোল্টেজ স্টাবিলাইজার ব্যবহার করতে হবে। যেহেতু কারেন্টের ভোল্টেজ কম বেশি হয়। এই ভোল্টেজ স্টাবিলাইজার ব্যবহারের ফলে আপনার ফ্রিজের নিরাপত্তা অনেকাংশে বেড়ে যাবে।
আবার নতুন ফ্রি জানার পরে এটি কোন জায়গায় রাখবেন এটিও সিলেক্ট করা জরুরী। এমন জায়গায় ফ্রিজ রাখতে হবে যেন পরবর্তীতে এটিকে নড়াচড়া করাতে অনেক সুবিধা হয় এবং দেওয়ালের সাথে যেন ঘষা লেগে না থাকে। এটিও ফ্রিজ ব্যবহারের আরেকটি বিশেষ নিয়ম। আবার অনেককে দেখা যায় নতুন ফ্রিজ কিনে এর ভেতরে গাদাগাদি করে জিনিসপাতি রাখে। এটিও মোটেও ঠিক নয়। আবার ফ্রিজের মধ্যে মাছ মাংস রাখার জন্য পলিথিনে ছোট ছোট প্যাকেটের মত করে সংরক্ষণ করবেন। এটিও নতুন ফ্রিজ ব্যবহারের সঠিক নিয়মের মধ্যে পড়ে। আর সবচেয়ে লক্ষণীয় যেটা সেটি হল গরম খাবার কখনোই ফ্রিজের মধ্যে রাখবেন না। খাবারটি ঠান্ডা করে তারপরে ফ্রিজের মধ্যে রাখবেন। উপরোক্ত এই নিয়মগুলো হল নতুন ফ্রিজ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম। এই নিয়মগুলো মেনে আপনি ফ্রিজ ব্যবহার করলে আশা করা যায় সেটি দীর্ঘদিন স্থায়ী হবে। আর একজন নতুন ব্যক্তির ফ্রিজ কেনার পরে এই বিষয়গুলোই জানার আগ্রহ বেশি থাকে যা এ আর্টিকেলের মধ্যে উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করছি আপনি কাঙ্খিত বিষয়গুলো বুঝতে সক্ষম হয়েছেন।
সম্পূর্ণ ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম
মূলত আমরা বিভিন্ন উপায়ে ফ্রিজ পরিষ্কার করতে পারি। তবে ফ্রিজ পরিষ্কার করার বিশেষ কিছু নিয়ম রয়েছে। যেই নিয়মগুলো অনুসরণ করে ফ্রিজ পরিষ্কার করলে সেগুলো অনেক কার্যকরী এবং ফ্রিজের পক্ষে সেটা ভালো হয়। তাহলে চলুন কি সেই নিয়ম তা জেনে নেওয়া যাক। ফ্রিজ অপরিষ্কার থাকলে তা খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আবার ফ্রিজ অপরিষ্কার রাখার ফলে এর মধ্যে যে খাবারগুলো রাখা হয় তাও জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। কাজেই, প্রতিনিয়ত ফ্রিজ পরিষ্কার করা আমাদের জন্য অবশ্যই পালনীয়। দীর্ঘদিন সচল থাকার ফলে ফ্রিজের মধ্যে যেহেতু বরফ জমা থাকে তাই ফ্রিজ পরিষ্কার করার একদিন পূর্বে তা অবশ্যই বন্ধ রাখতে হবে। এটি ফ্রিজ পরিষ্কার করার প্রথম নিয়ম। তারপর ফ্রিজটির দুই পাশে এবং পেছনের অংশে নরম ঝাড়ু এবং স্পঞ্জ জাতীয় জিনিস দিয়ে খুব ভালোভাবে এবং যত্ন সহকারে পরিষ্কার করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কি এবং কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর সুবিধা সম্পর্কে জেনে নিন
এটিও ফ্রিজ পরিষ্কার করার বিশেষ নিয়মের মধ্যে পড়ে। তারপর ফ্রিজের কয়েলের ধুলোবালি গুলো পরিষ্কার করার জন্য অবশ্যই নরম ঝাড়ু ব্যবহার করবেন। এক্ষেত্রে অতি সাবধানতা অবলম্বন করবেন যেন ফ্রিজের কাঙ্ক্ষিত তার গুলো ছিড়ে না যায়। এইতো ফ্রিজের বাইরের অংশগুলো পরিষ্কার করা হয়ে গেছে। এবার আসা যাক ফ্রিজের ভেতরের অংশে। ফ্রিজের ভেতরের অংশটি মূলত দুই ভাগে বিভক্ত থাকে। একটি ডিপ ফ্রিজের অংশ অপরটি নরমাল ফ্রিজের অংশ নামে পরিচিত। নরমাল ফ্রিজের অংশটি পরিষ্কার করার জন্য আপনি ভেতর থেকে যাবতীয় জিনিসগুলো বের করে তারপর পরিষ্কার একটি কাপড় দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করবেন। সেই কাপড়টি যদি শ্যাম্পু কিংবা অন্যান্য ভালো ডিটারজেন্টের পানিতে ভিজিয়ে পরিষ্কার করেন তাহলেও ভালো হয়। আর ফ্রিজের ভেতরের যে জিনিসপত্রগুলো ছিল সেগুলো পরিষ্কার পানিতে ভালোভাবে ধৌত করে শুকিয়ে নিবেন।
শুকিয়ে গেলে এগুলো ভালোভাবে সেটআপ দিলেই হয়ে যাবে। এবার ডিপ ফ্রিজের দিকে আসা যাক। ডিপ ফ্রিজের মধ্যে যেহেতু বরফ জমা থাকে তাই এটি পরিষ্কার করতে একটু কষ্টই পোহাতে হয়। তবুও ডিপ ফ্রিজটি ভালোভাবে পরিষ্কার করার জন্য অবশ্যই একটি পরিষ্কার ব্রাশের ব্যবহার করবেন। ডিপ ফ্রিজে যেহেতু মাছ-মাংস সহ আরো নানা রকম জিনিসপত্র রাখা হয় তাই এর মধ্যে একটু অন্যরকম গন্ধ সৃষ্টি হতে পারে। কাজেই, পরিষ্কার করার জন্য ভালো সুগন্ধিযুক্ত শ্যাম্পু অথবা ডিটারজেন্টের ব্যবহার করাই শ্রেয় হবে। ব্রাশ দিয়ে ডিপ ফ্রিজে প্রতিটি কোনায় ভালোভাবে পরিষ্কার করবেন। তারপর পরিষ্কার এবং নরম কাপড় দিয়ে ফ্রিজটি ভালোভাবে পরিষ্কার করবেন। এইতো আপনার ফ্রিজের পুরোপুরি পরিষ্কারের কাজ শেষ। উপরোক্ত এই নিয়মগুলো মেনেই ফ্রিজ পরিষ্কার করতে হয়। এখন আমি আশা করছি আপনি ফ্রিজ পরিষ্কারের যাবতীয় নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
আমাদের পরামর্শ
সঠিকভাবে ফ্রিজ পরিষ্কার করা শুধু একটি পরিপাটি রান্নাঘরের চিহ্ন নয়, এটি একটি স্বাস্থ্যকর জীবনেরও প্রতিফলন। অনেক সময় অজান্তেই ফ্রিজে জমে থাকা পুরনো খাবার, বরফ বা দাগ জীবাণু ছড়ানোর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই নিয়মিত পরিষ্কারের মাধ্যমে আমরা কেবল ফ্রিজের কার্যক্ষমতা বাড়াই না, বরং নিজেদের পরিবারের সুস্থতার দিকেও গুরুত্ব দিই। ঘরোয়া কিছু সহজ উপকরণ ব্যবহার করে আপনি একদম স্বাভাবিক উপায়ে ফ্রিজকে ঝকঝকে ও জীবাণুমুক্ত রাখতে পারেন।
এই লেখায় আমরা ধাপে ধাপে যেভাবে ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম তুলে ধরেছি, তা যে কেউ খুব সহজে অনুসরণ করতে পারবে। কোনো রকম দামি কেমিক্যাল বা পেশাদার ক্লিনিং সার্ভিস ছাড়াই আপনি নিজেই ঘরে বসেই ফ্রিজ পরিষ্কার করতে পারবেন। লেবু, বেকিং সোডা, ভিনেগার বা গরম পানি এই সাধারণ উপাদানগুলোর সঠিক ব্যবহার জানলে পরিষ্কারের কাজ একেবারে ঝামেলাহীন হয়ে যাবে। সবচেয়ে ভালো দিক হলো, ঘরোয়া পদ্ধতিতে পরিষ্কার করলে পরিবেশেরও কোনো ক্ষতি হয় না।
আরো পড়ুন ঃ ভেজাল খাদ্য চেনার ১২টি উপায় - ভেজাল খাদ্যের ১১টি ক্ষতিকর দিক
সবশেষে বলতেই হয়, ফ্রিজ পরিষ্কারের কাজটি কখনোই উপেক্ষা করা উচিত নয়। মাসে অন্তত একবার ফ্রিজ পরিষ্কার করার অভ্যাস গড়ে তুললে, তা শুধু আপনার পরিবারের জন্যই নয়, ফ্রিজের দীর্ঘস্থায়ীতার জন্যও উপকারী হবে। যারা এখনো দ্বিধায় আছেন, তাদের জন্য পরামর্শ একবার ঘরোয়া উপায়ে ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম অনুসরণ করে দেখুন, আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন কতটা সহজ ও কার্যকর এটি। নিয়মিত যত্ন আর সামান্য সচেতনতাই হতে পারে আপনার সুস্থ ও পরিপাটি জীবনের চাবিকাঠি।
ট্যাগ সমূহ ঃ ফ্রিজ পরিষ্কার, ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম, ফ্রিজ পরিষ্কার করার সঠিক পদ্ধতি, ডিপ ফ্রিজ পরিষ্কার করার নিয়ম, নতুন ফ্রিজ চালু করার নিয়ম
Please comment in accordance with the policy of the 'M.F. Hossain' website. Each comment is reviewed;
comment url