ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় ও খাদ্য তালিকা সম্পর্কে জানুন
বর্তমান বিশ্বে ডায়াবেটিস একটি নীরব ঘাতক হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। যারা ইতোমধ্য ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় ও খাদ্য তালিকা সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তাদের জন্য আমাদের আজকের এই আলোচনা।
অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মানসিক চাপ এবং দৈহিক পরিশ্রমের অভাব এসব কারণে দিন দিন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। একবার ডায়াবেটিস ধরা পড়লে তা পুরোপুরি নির্মূল করা যায় না, তবে নিয়মিত নজরদারি, সঠিক খাদ্য পরিকল্পনা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারার মাধ্যমে এ রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। তাই “ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়” জানা এবং তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করাই একমাত্র কার্যকরী একটি সিদ্ধান্ত।
অনেকেই মনে করেন শুধু ওষুধ খেলেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব, কিন্তু বাস্তবতা হলো ওষুধের পাশাপাশি খাদ্যতালিকায় সচেতন পরিবর্তন, দৈহিক অনুশীলন এবং মানসিক স্বাস্থ্যের যত্নও সমান গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিনের খাবারে কোন কোন উপাদান রাখা উচিত, কোনগুলো এড়িয়ে চলা দরকার, সেগুলো জানা থাকলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো যায়। এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিতভাবে জানবো ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় এবং সেইসঙ্গে এমন কিছু উপকারী খাদ্য তালিকা যা আপনার সুস্থ জীবনযাত্রার অংশ হতে পারে।
ডায়াবেটিস কি - ডায়াবেটিস কেন হয়
ডায়াবেটিস রোগের অপর নাম হচ্ছে বহুমূত্র। ডায়াবেটিস হলো শরীরের একটি অস্বাভাবিক অবস্থা যেখানে শরীর থেকে ইনসুলিন তৈরি হয় না এবং শরীর ইনসুলিন তৈরি করতে সক্ষম হয় না বা শরীরে ইনসুলিন তৈরীর ক্ষমতা কার্যকর থাকে না পাশাপাশি রক্তের গ্লুকোজ এর মাত্রা মাত্রা বেশি হয়ে যায় চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এরকম অবস্থাকে ডায়াবেটিস বলা হয়। ডায়াবেটিস প্রধানত হয়ে থাকে শরীরে ইনসুলিনের পরিমাণ কমে গিয়ে গ্লুকোজ এর মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়ে গেলে। এজন্য প্রধানত ডায়াবেটিস রোগ দেখা দেয়।
আরো পড়ুন ঃ চর্ম রোগের ৭টি ঘরোয়া চিকিৎসা - চর্ম রোগ সারানোর বিশেষ উপায়
আমরা যে খাবারগুলো খেয়ে থাকি তখন প্যানক্রিয়াস থেকে ইনসুলিন হরমোন ক্ষরিত হয়। ইনসুলিন হরমোন এর কাজ হচ্ছে খাবারের গ্লুকোজ এর মাত্রা কমিয়ে দেওয়া এবং শরীরকে স্বাভাবিক রাখা। মূলত যখন শরীর থেকে ইনসুলিন হরমোন নিঃসৃত হয় না কিংবা কমে যায় তখন আর এটি খাবারের গ্লুকোজ এর মাত্রা কমাতে পারেনা। যার ফলে শরীরে অতিরিক্ত গ্লুকোজ জমা হয়ে যায় এবং এই অবস্থায় ডায়াবেটিস হয়। আশা করছি ডায়াবেটিস কি? এবং ডায়াবেটিস কেন হয় বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।
ডায়াবেটিস এর লক্ষণ (Symptoms of diabetes)
ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয় বা কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে বিষয়টি জানার পূর্বে আমাদের জানা প্রয়োজন ডায়াবেটিস এর লক্ষণ কি? অর্থাৎ ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণগুলো সম্পর্কে আমাদের জানা থাকা প্রয়োজন। তো চলুন জানার চেষ্টা করি ডায়াবেটিস এর লক্ষণ সম্পর্কে। ডায়াবেটিস এর বেশ কিছু লক্ষণ আছে তবে প্রধান লক্ষণগুলো নিচে দেওয়া হলঃ
- ঘন ঘন প্রসাবের প্রবণতা দেখা দেওয়া ডায়াবেটিসের প্রধান লক্ষণ।
- অবসাদগ্রস্ততা দুর্বলতা এবং ক্লান্তি অনুভূত হওয়া।
- বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে।
- শরীর এর ওজন দ্রুত কমে যায়।
- শরীরের চুলকানি দেখা দিতে পারে।
- ক্ষুধামন্দা বা অতিরিক্ত ক্ষুধা থাকতে পারে।
- কোন ক্ষতস্থান সারাতে অধিক সময় লাগতে পারে।
- ধীরে ধীরে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যেতে পারে সাথে সাথে মাথা ব্যথাও হতে পারে।
- বগলে এবং ঘাড়ে কালচে ধরনের ছাপ দেখা যায়।
- একটু পর পর পানির পিপাসা লাগাও ডায়াবেটিস এর লক্ষণ।
এই ছিল মোটামুটি ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ। তো এখন নিশ্চয়ই ডায়াবেটিস এর লক্ষণ সম্পর্কে একটি ক্লিয়ার ধারণা পেয়েছেন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়
ডায়াবেটিস একটি পরিচিত রোগের মধ্যে অন্যতম। এখন কম বেশি সকলেরই ডায়াবেটিস দেখা যাচ্ছে। সাধারণ কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এখন আপনাদের দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় সম্পর্কে কিছু ধারনা দেয়ার চেষ্টা করব। তাড়াতাড়ি ডায়াবেটিস কমাতে হলে আপনাকে প্রথমেই মনে রাখতে হবে খাবারের অভ্যাস অর্থাৎ সঠিক সময়ে খাবার গ্রহণ করা। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সকাল, দুপুর এবং রাতে সময় মত খাবার গ্রহণ করতে হবে ।
আবার এই খাবার কতটুকু খাচ্ছেন অর্থাৎ খাবারের পরিমাণ অনেকাংশে নির্ভরশীল ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে। এজন্য চিকিৎসকরা ভারী খাবার অর্থাৎ ভাতের পরিবর্তে রুটি খেতে বলেন। এতে করে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তাছাড়া পরবর্তীতে ডায়াবেটিস রোগীর খাবার তালিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। এরপর আপনার খাবার তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার রাখতে হবে। মাত্রাতিরিক্ত লবণ এবং চর্বি জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে।
এগুলো ডায়াবেটিসের মাত্রা কে আরও বাড়িয়ে দেয়। প্রতিদিন খাবারের সবুজ শাকসবজি এবং ফলমূল খেতে হবে। তাছাড়া ফাস্টফুড এবং অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এটি অত্যন্ত কার্যকরী। দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় এর মধ্যে আরও অনেক বিষয় রয়েছে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হলে আপনাকে প্রতিদিন সকালে অবশ্যই হাঁটাহাঁটি করতে হবে। এটা দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার একটা উত্তম উপায় হতে পারে। একটানা অধিক সময় বসে থেকে কাজ না করাই ভালো।
আরো পড়ুন ঃ চুলকানি দূর করার ১৫টি ঔষধের নাম - চুলকানি প্রতিরোধের উপায়
বিশেষ করে যারা গেম খেলায় আসক্ত কিংবা কম্পিউটারে কাজ করে সেক্ষেত্রে তাদের কাজের ফাঁকে মাঝেমধ্যে একটু পায়চারি করা উচিত এতে করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এটিও তাড়াতাড়ি ডায়াবেটিস কমানোর উপায় । আর সবচেয়ে লক্ষণীয় যে বিষয়টি সেটি হচ্ছে ধূমপানের ধারের কাছেও যাওয়া যাবে না। ধূমপান করলে শুধু ডায়াবেটিসের যে ক্ষতি হয় সেটা নয়, বরং ধূমপান মানব দেহের জন্য সকল ক্ষেত্রেই ক্ষতিকর। তাই ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে।
পরিশেষে, আপনার শরীরকে মাঝেমধ্যে চেকআপ করা ভালো। এতে ডায়াবেটিসের মাত্রা সহ আপনার শরীর কেমন অবস্থায় আছে সেটা বোঝা যাবে। এই নিয়মগুলো মেনে চললে আশা করা যায় যে আপনার ডায়াবেটিস দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। এগুলোই হলো মূলত দ্রুত ডায়াবেটিস কমানোর উপায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখবে যেসব খাবার
আজকের আর্টিকেলের প্রধান বিষয় যেটি সেটি হচ্ছে ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয় বা কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে। উপরের প্যারাগ্রাফ এ দ্রুত ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার উপায় আলোচনায় কিছু খাদ্যাভাসের কথা বলা হয়েছে যেগুলো খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমানো সম্ভব। এগুলো ছিল মূলত খাদ্যাভাস। এখন আমরা জানবো কোন খাবারগুলো খেলে ডায়াবেটিস ভালো করা যায় বা কি খেলে
ডায়াবেটিস দ্রুত কমানো যায়। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক ডায়াবেটিস কমানোর কিছু ঘরোয়া উপায়। এক গবেষণায় দেখা গেছে সবুজ চা (যাকে আমরা গ্রিন টি বলি) ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে অর্থাৎ ডায়াবেটিস দ্রুত ভালো করতে সাহায্য করে। এটি শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা কে বাড়িয়ে দেয় ফলে গ্লুকোজ এর মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয় এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। আবার ডিমের সাদা অংশ খেলেও ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রিত হয়। আমরা অনেকেই টক দই খায় না।
কিন্তু টক দই ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। এটি রক্তে গ্লুকোজ এর মাত্রা কে কমিয়ে দেয়। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসে। আবার ডায়াবেটিস কমাতে সবুজ শাকসবজিও ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। সবুজ শাকসবজির মধ্যে প্রধানত ঢেঁড়স ডায়াবেটিস তথা বহুমূত্র রোগ উপশমের সাহায্য করে। তাছাড়া পালংশাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লেটুস ইত্যাদি শাকসবজিও ডায়াবেটিস দ্রুত কমাতে সাহায্য করে। লেবু আমরা অনেকেই খেয়ে থাকি।
আরো পড়ুন ঃ শরীর ভালো রাখার উপায় - শরীর সুস্থ রাখার ১৬টি খাবার তালিকা
কিন্তু আমরা কি জানি লেবুও ডায়াবেটিস রোগ কমাতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস কে নিয়ন্ত্রণ করতে লেবুও কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মধ্যে শরীরে ভিটামিন সি এর ঘাটতি হলে ডায়াবেটিস রোগ দেখা দিতে পারে। তাই ভিটামিন সি এর অভাব পূরণার্থে আমরা লেবু খেতে পারি। এতে করে আমাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তাছাড়া শস্য দানা ও ডায়াবেটিস রোগ কমাতে সাহায্য করে। শস্য দানা রক্তে গ্লুকোজ এর মাত্রা কে নিয়ন্ত্রণ করে।
যার ফলে আমাদের ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকে। আবার বাদামও ডায়াবেটিস রোগকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। আমাদের অনেকেরই মটরশুটি অত্যন্ত প্রিয় একটি খাবার। আসলেই মটর শুটির অনেক কার্যকরী গুণও রয়েছে। মটরশুটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং ইনসুলিন হরমোন ক্ষরণকে বাড়িয়ে দেয় ফলে ডায়াবেটিসের মাত্রা কমে যায় এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাছাড়া মটরশুঁটি হৃদরোগ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাকেও অনেকাংশে কমাতে সাহায্য করে।
যে খাবারগুলোর কথা উল্লেখ করা হলো এগুলো ডায়াবেটিস উপশমে অত্যন্ত কার্যকরী। তো আশা করি এখন নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন কোন খাবারগুলো খেলে ডায়াবেটিস ভালো হয় বা কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে। এই খাবারগুলো নিয়মিত খান তাহলে ইনশাল্লাহ আপনার ডায়াবেটিস আগের চেয়ে নিরাময় থাকবে। আশা করি ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয় এ সম্পর্কে একটা সুস্পষ্ট ধারণা আপনাকে দিতে পেরেছি।
ঔষধ ছাড়াই ডায়াবেটিস কমানোর ঘরোয়া উপায়
উপরে ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয় এবং কি খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমে এগুলো সহ ডায়াবেটিস সংক্রান্ত আরো অনেক বিষয়ে আলোচনা করেছি। এখন আমাদের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে ওষুধ ছাড়াই ডায়াবেটিস কমানোর উপায় তথা ডায়াবেটিস কমানোর ঘরোয়া উপায়। তো চলুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে ওষুধ ছাড়াই ডায়াবেটিস কমাবেন অথবা ডায়াবেটিস কমানোর ঘরোয়া উপায়ই বা কি?
ওষুধ ছাড়াই ডায়াবেটিস কমানোর উপায় বলতে আপনার চলাফেরা এবং খাদ্যাভাসের প্রতি গুরুত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে। আপনার শারীরিক অতিরিক্ত ওজন যদি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন তাহলে ডায়াবেটিস কমানো অনেকাংশে সহজ হয়ে যায়। আর শরীরের ওজন কমাতে হলে নিয়মিত আপনাকে ব্যায়াম করতে হবে। এর জন্য কোন ওষুধের প্রয়োজন হয় না। আবার আপনার খাদ্যাভাসের পরিবর্তন করতে হবে।
অতিরিক্ত তেল চর্বি এবং মসলাযুক্ত খাবার, ফাস্টফু্ড, বিরিয়ানি এগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। আপনার খাদ্যাভাসে এই পরিবর্তনগুলো আনলে ওষুধ ছাড়াই আপনার ডায়াবেটিস অনেকাংশে নিয়ন্ত্রিত হবে। তাছাড়া প্রত্যেক দিন খাবারে সবুজ শাক-সবজি এবং সালাদ জাতীয় খাবার খেতে পারেন এতে করে আপনার ডায়াবেটিস ওষুধ ছাড়াই অনেকাংশে কমানো সম্ভব। ডুমুরজাতীয় ফল, করলা, মেথি ইত্যাদি খাবার প্রতিনিয়ত খান।
আরো পড়ুন ঃ এলার্জি দূর করার ১১টি উপায় - এলার্জি ঔষধ এর ১৩টি নাম
দেখবেন আপনার ডায়াবেটিস অনেক নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে কোন ওষুধ ছাড়াই। তাছাড়া করলাতে চারাটিন এবং মোমরডিসিন নামক উপাদান থাকে। যা রক্তে গ্লুকোজ এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রিত থাকে। এটি হচ্ছে ডায়াবেটিস কমানোর ঘরোয়া উপায়। তাছাড়া ডায়াবেটিস কমানোর ঘরোয়া উপায় এর মধ্যে আরেকটি বিষয় হচ্ছে আপনি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে করলার রস খেতে পারেন। এটি করলেও ডায়াবেটিস অনেক নিরাময় করা সম্ভব হয়।
আমরা সকলেই এলোভেরা চিনি। অ্যালোভেরাই রয়েছে ফাইটোস্ট্যারলস নামক একটি পদার্থ যেটা ডায়াবেটিস রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে। তাছাড়া এলোভেরার সাথে হলুদ এবং তেজপাতা মিশিয়ে পান করতে পারেন। এটিও ডায়াবেটিস রোগ উপশম এর সাহায্য করে। আর এগুলো সবই হলো মূলত ডায়াবেটিস রোগ উপশমে ঘরোয়া চিকিৎসা বা ডায়াবেটিস কমানোর ঘরোয়া উপায়।
মোটকথা, ওষুধ ছাড়াই ডায়াবেটিস কমাতে হলে আপনাকে আপনার জীবন যাপন এবং খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনতে হবে এবং ঘরোয়া পদ্ধতিতে ডায়াবেটিস কমাতে হলে আপনাকে উপরোক্ত কাজগুলো করতে হবে। তো আশা করি এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন ওষুধ ছাড়া ডায়াবেটিস কমানোর উপায় এবং ডায়াবেটিস কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে।
আমাদের পরামর্শ
ডায়াবেটিস কোনো ভয়ানক অভিশাপ নয় বরং এটি এমন একটি স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ, যেটিকে নিয়মিত সচেতনতার মাধ্যমে যথেষ্টভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। যারা প্রতিনিয়ত নিজের খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চা ও জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনেন, তারা ডায়াবেটিসকে পাশ কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে সক্ষম হন। তাই শুরুটা হওয়া উচিত সচেতনতা থেকে, এবং এরপর ধাপে ধাপে হবে গ্রহণযোগ্য পরিবর্তন।
এই লেখায় আমরা যেসব ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি, তা বাস্তবে প্রয়োগ করতে পারলেই আপনি নিজের শরীরের উপর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে পারেন। ওষুধ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে এর পাশাপাশি সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত ঘুম, মানসিক প্রশান্তি এবং নিয়মিত হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম এইসবই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মূল হাতিয়ার। তেমনি খাদ্য তালিকার সঠিক পরিকল্পনাও আপনাকে রক্তে শর্করার পরিমাণ স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করবে।
আরো পড়ুন ঃ মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার ১৫টি উপায় - মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার খাবার
সবশেষে, মনে রাখা জরুরি যে প্রতিটি মানুষের শরীর আলাদা, তাই কারও খাদ্যতালিকা বা নিয়ম অন্য কারও জন্য ১০০% কার্যকর নাও হতে পারে। তাই নিজের শরীরকে ভালোভাবে বোঝা এবং একজন পেশাদার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। তবে সচেতন ও দায়িত্বশীল হলে আপনি নিজেই নিজের জন্য সবচেয়ে কার্যকর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় খুঁজে পাবেন এবং সুস্থ জীবন উপভোগ করতে পারবেন।
ট্যাগ সমূহ ঃ ডায়াবেটিস এর লক্ষণ, ডায়াবেটিস কি খেলে ভালো হয়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়
Please comment in accordance with the policy of the 'M.F. Hossain' website. Each comment is reviewed;
comment url